ছাত্রজীবনে আর্থিক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যায়নি এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশ কম। আবার অনেক শিক্ষার্থীই আছেন যারা বাসা থেকে টাকা নিতে পারেন না বা নিতে সংকোচ বোধ করেন। শিক্ষাজীবনের এই সময়টায় আর্থিকভাবে সচ্ছল থাকলে অনেকগুলো সুবিধা পাওয়া যায়। নিজের খরচ নিজে মেটাতে পারলে এক দিক দিয়ে যেমন আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়, তেমনি পরিবারের ওপর থেকেও একটি বাড়তি চাপ নেমে যায়। তাই সব শিক্ষার্থীরই উচিত শিক্ষাজীবনের এই সময়টায় পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার বিভিন্ন পন্থা খুঁজে বের করা। চলুন, ডেইলি লাইভের আজকের পোস্টে জেনে নিই— ছাত্রজীবনে আয় করার ৫টি কৌশল সম্পর্কে।
ছাত্রজীবনে আয় করার ৫টি কৌশল
টিউশনি
ছাত্রজীবনে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো টিউশনি করা। ছাত্রজীবনে ছাত্র পড়িয়ে অর্থ আয়ের এই প্রচলন বেশ পুরোনো। তাই এক বা একাধিক টিউশনির মাধ্যমে সহজেই আয় করা সম্ভব। টিউশনি পেতে হলে শুরুতেই চোখ কান খোলা রাখতে হবে। প্রয়োজনে বিজ্ঞাপন দিয়ে কিংবা টিউশন মিডিয়ার কাছ থেকে টিউশনি নেওয়া যেতে পারে।
⏩ আরও পড়ুন: অফিসে যে কাজগুলো করবেন না!
সেলসম্যানের চাকরি
ছাত্রজীবনে আয় করার আরেকটি মাধ্যম হতে পারে সেলসম্যানের চাকরি। বিভিন্ন মার্কেটে, শোরুমে কিংবা মেলায় সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করার জন্যে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। সেসব বিজ্ঞাপন থেকে আবেদনের মাধ্যমে পার্টটাইম চাকরি করা যেতে পারে। বিশেষত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বাণিজ্য মেলা ও বই মেলায় প্রচুর সেলসম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব চাকরি চাইলেই লুফে নিতে পারেন সহজেই!
বনে যান ফ্রিল্যান্সার
ছাত্রজীবনে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে অর্থ আয়ের সহজ একটি মাধ্যম। ফ্রিল্যান্সিং কোনো নির্দিষ্ট ‘জব’ নয় বরং অনেক ধরনের কাজের সমষ্টি। যেমন- ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, এসইও ম্যানেজিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডেভেলপিং, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি। এসবের যেকোনো একটি বা একাধিক বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জনের পর আপনিও শুরু করে দিতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং। এতে এক দিক দিয়ে আপনি যেমন লাভবান হবেন, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের কারণে জাতীয় অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতেও অবদান রাখতে পারবেন। কিছু জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট হলো- ফ্রিল্যান্সার, ফাইভার, আপওয়ার্ক ইত্যাদি।
করতে পারেন ছোটোখাটো ব্যবসা
উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন কে না দেখে? অনেকেই ভেবে থাকেন যে উদ্যোক্তা হতে গেলে বুঝি বিপুল অর্থের পুঁজি থাকতে হয়। আমাদের প্রচলিত ধ্যান ধারণা অনুযায়ী সমাজে এমন একটি ব্যাপার খুব চালু রয়েছে। কিন্তু কথাটি মোটেও সত্যি নয়। উদ্যোক্তা হতে চাইলে কাড়ি কাড়ি টাকা থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং স্বল্প পুঁজিতেই শুরু করা যায় এমন ব্যবসায় হাত দিন। আর যে বিষয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান, সে ব্যবসা নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করেন। সম্ভাব্য ক্রেতা কারা সে বিষয়ে নিশ্চিত হন। একই ধরনের উদ্যোক্তাদের পরামর্শও নিতে পারেন চাইলে। তাহলে দেরি কেন? আজই কাজে নেমে পড়ুন, পরিকল্পনা মাফিক। মনে রাখবেন, পৃথিবীর প্রায় সকল সফল উদ্যোক্তাই তাদের ব্যবসা শুরু করেছিলেন শূন্য থেকে। কেউই কাড়ি কাড়ি অর্থ হাতে নিয়ে উদ্যোক্তা হননি।
করতে পারেন ডেলিভারি ম্যানের চাকরি
গত কয়েক বছরে ইন্টারনেটের ব্যাপক প্রসারের ফলে বেড়েছে অনলাইন কেনাকাটার পরিধি। অল্প সময়ে সর্বশরীরে মার্কেটে না গিয়েও ঘরে বসে অনলাইনে অর্ডার করলেই বাসায় পৌঁছে যাচ্ছে অর্ডারকৃত পণ্যটি। অনলাইনে কেনাকাটা যত জনপ্রিয় হয়েছে তত বেশি বেড়েছে ডেলিভারি ম্যানের চাহিদা। ডেলিভারি ম্যানের মূল কাজ হলো বিক্রেতার কাছ থেকে পণ্যটি নিয়ে ক্রেতার হাতে পৌঁছে দেওয়া। বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট, ডেলিভারি সার্ভিস ওয়েবসাইট, অনলাইন শপ, এমনকি সত্যিকারের শপগুলোও আজকাল তাদের অনলাইন ক্রেতাদের জন্যে ডেলিভারি ম্যান রাখছেন। আর আপনারা চাইলে লুফে নিতে পারেন সেই ডেলিভারি ম্যানের চাকরিটি। এই চাকরি করে আপনি চাইলে সহজেই ছাত্রজীবনে টাকা আয় করতে পারবেন। তবে ডেলিভারি ম্যানের কাজ করতে গেলে আপনার কাছে অবশ্যই একটি সাইকেল অথবা মোটরসাইকেল থাকতে হবে!
⏩ আরও পড়ুন: ইন্টারভিউতে যে ভুলগুলো করবেন না!
**********
ওপরে যে পাঁচটি কৌশল আলোচনা করা হয়েছে তা নিতান্তই সহজ পাঁচটি কৌশল। এগুলো ছাড়াও ছাত্রজীবনে আয় করার আরও অনেক মাধ্যম রয়েছে। আপনারা একটু যদি চোখ কান খোলা রাখেন, তবে আশেপাশে এমন অনেক কাজ দেখতে পাবেন যা করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি অর্থ আয় করছে। তো, আর দেরি কেন? আজই অর্থ উপার্জনের জন্য আপনার উপযুক্ত ও পছন্দের কাজটি শুরু করুন।
❤️❤️❤️
ভালো পোস্ট। আমার কাজে লাগবে।