ইন্টারভিউতে যে ভুলগুলো করবেন না!

ইন্টারভিউতে যে ভুলগুলো করবেন না!

ধরুন, বসে আছেন ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে। ইন্টারভিউ বা ভাইবা শেষ করে কেউ বেরুচ্ছে হাসিমুখে, আর কারও মুখে আছে বিষাদের ছায়া। আপনার মধ্যে এখন একটি আতঙ্ক কাজ করছে। আগে থেকেই ইন্টারভিউ কেমন হবে এটি নিয়ে বিচলিত ছিলেন, এখন আপনার ভেতরের চাপা ভয়টা আরও বেড়ে গেল। ইন্টারভিউ শেষ হওয়ার পরে যাদের চেহারা মলিন ছিল, তারা হয়তো কিছু ভুল করেছিল যার কারণে তাদের ইন্টারভিউ ভালো হয়নি। আর ইন্টারভিউ ভালো না হলে চাকরি পাওয়ার দুরূহ। তো প্রিয় পাঠক, ইন্টারভিউতে যে ভুলগুলো করবেন না বা করা যাবে না, তা নিয়েই আমাদের আজকের লেখাটি। চলুন, ডেইলি লাইভের আজকের পোস্টে জেনে নিই— ইন্টারভিউতে যে ভুলগুলো করবেন না বা করা যাবে না; সে সম্পর্কে বিস্তারিত।

ইন্টারভিউতে যে ভুলগুলো করবেন না

সময়মত উপস্থিত না হওয়া

ইন্টারভিউ বোর্ডে দেরিতে উপস্থিত হওয়া মানে আপনার Time sense না থাকা বোঝায়। আপনি দেরি করে আসলে ইন্টারভিউ গ্রহণকারীদের মনে আপনার সম্পর্কে নেতিবাচক একটি ধারণা জন্মাবে শুরুতেই। এটা অনেকটা যুদ্ধে নামার আগেই যুদ্ধে হেরে যাওয়ার মতো। ইন্টারভিউ শুরু হওয়ার আধাঘন্টা আগে থেকেই ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করবেন।

⏩ আরও পড়ুন: অপছন্দের সহকর্মীর সঙ্গে কাজ করার উপায়!

পোশাকে নজর না দেওয়া

কথায় বলে, আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী। ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনাকে দেখে একটা Good impression তৈরি করবে আপনার পোষাক। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোষাক আমাদের মন-মেজাজ ফুরফুরে রাখে। এটি আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে। একটা অগোছালো শার্ট আর একটা সুন্দর পরিষ্কার আয়রন করা শার্ট পরলে আপনি নিজেই এটা ধরতে পারবেন। ফর্মাল এবং পরিচ্ছন্ন পোশাকে ইন্টারভিউ দিতে যাবেন।

বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক না রাখা

“চোখ যে মনের, কথা বলে”- এরকম একটা গান আছে সম্ভবত। চোখ আসলেই মনের কথা বলতে পারে। দেহের ভাষার মাধ্যমে যে যোগাযোগ করা হয় সেটিকে Nonverbal communication বা বাংলায় অনুচ্চারিত যোগাযোগ বলে। আপনার হাত নাড়ানো, কথা বলার ধরন কিংবা মুখের এক্সপ্রেশন হতে হবে একদম পরিমাণ মতো এবং ঠিকঠাক। ইন্টারভিউতে মার্জিত, ভদ্র এবং নম্র স্বভাব বজায় রাখবেন।

সব জানার ভং ধরা

ইন্টারভিউ বোর্ডে গেলে আমি সবই জানি টাইপের ভং ধরা যাবে না। এটা করতে গিয়ে অনেকেই চাকরি পায় না। একটা প্রশ্ন করা হলো, অথচ আপনি উত্তর জানেন না। এদিকে ভং ধরছেন যে আপনি এটা খুব ভালোভাবে জানেন এবং উত্তরও দেবেন। পরে উত্তর দিতে না পারলে আপনাকে বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। ওভার কনফিডেন্স খুব খারাপ জিনিস। এটি এড়িয়ে চললে ভালো। কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে ভদ্রতার সহিত উত্তর দিন “স্যার, এই মুহূর্তে আমার উত্তরটা মনে পড়ছে না।”

আগের চাকরি সম্পর্কে নিন্দা

যদি আপনি আগে কোথাও চাকরি করে থাকেন তাহলে সেটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে কখনোই বাজে ভাবে বলবেন না বা সরাসরি বদনাম করবেন না। এটি করলেই ধরা খাবেন। আপনি আগে কোনো চাকরি ছেড়ে আসলে সেটি ছাড়ার একটি সুন্দর যুক্তিসঙ্গত কারণ বলবেন। এভাবে কখনোই বলবেন না যে, “আগের চাকরিতে বস বেশি প্যারা দিতো” বা “আগের কোম্পানি ভালো ছিল না তাই ওটা ছেড়ে দিয়েছি।”

ভুল তথ্য দেওয়া বা মিথ্যা বলা

ইন্টারভিউ বোর্ডে কখনোই মিথ্যা তথ্য দেবেন না। আপনার অভিজ্ঞতা কিংবা যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বাড়িয়ে বলবেন না। এগুলো করে চাকরি হয়ে গেলেও, পরে চাকরি হারাতে পারেন।

⏩ আরও পড়ুন: অফিসে যে কাজগুলো করবেন না!

প্রশ্নকর্তাকে মাঝপথে থামানো

প্রশ্নকর্তাকে মাঝপথে থামাবেন না। এতে প্রশ্নকর্তা মারাত্মক বিরক্ত হন। এটি ভালো রকমের অভদ্রতাও বটে। আপনি যখন ইন্টারভিউ দেবেন, তখন আপনার উচিত পুরো প্রশ্ন মনযোগ দিয়ে শোনা। পুরোপুরি প্রশ্ন শোনার পরে ভেবে সেটির উত্তর দেওয়া। আবার ভাবার সময়টা যেন বেশি না হয়। বেশি সময় নিলে তা নেগেটিভ ইম্প্রেশন তৈরি করবে আপনার সম্পর্কে।

**********

ইন্টারভিউ পর্যন্ত আপনি গিয়েছেন মানে আপনি একজন যোগ্য প্রার্থী। কিন্তু ওখানে গিয়ে সামান্য ভুলে চাকরি হারাতে হয়। প্রিয় পাঠক, ইন্টারভিউতে যে ভুলগুলো করবেন না; সেগুলো ওপরে মোটামুটি সবই দেওয়া হয়েছে। বিষয়গুলো মাথায় রেখে আপনি ইন্টারভিউ বোর্ডে গেলে আশা করি ঠেকবেন না। আজকের পোস্ট এই পর্যন্তই। পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন। ডেইলি লাইভ এর সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন:

2 thoughts on “ইন্টারভিউতে যে ভুলগুলো করবেন না!”

মন্তব্য করুন:

Scroll to Top